রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন
বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন খ্যাতনামা সমাজসেবিকা ও সাহিত্যিক। জন্ম-১৮৮০ সালের ৯ই ডিসেম্বর।বাংলাদেশের রংপুর জেলার পয়ারবন্দ গ্রামে। মৃত্যু-১৯৩২ সালে ৯ই ডিসেম্বর। কলকাতায় আসল নাম-রোকেয়া খাতুন। পিতা-জাহিরুদ্দিন আবু আলী হায়দার সাবের। মাতা-রাহাতুন্নেসা সাবেরা চৌধুরানী।
বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের শিক্ষা
তৎকালীন মুসলিম সামাজিক প্রথা অনুসারে বাড়িতেই তার শিক্ষা শুরু হয়। আরবি,উর্দু,বাংলা,ইংরেজি বিষয়ে তিনি জ্ঞান অর্জন করেন। ১৮৯৬ সালে ভাগলপুরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন এর সাথে তার বিবাহ হয়।এর পর তিনি বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন নামে পরিচিত হন।স্বামীর প্রেরণায় তিনি সাহিত্যচর্চা শুরু করেন।১৯০৯ সালে সাখাওয়াত হোসেন এর মৃত্যু হয়।
স্বামীর মৃত্যুর পর তার স্মৃতির উদ্দেশ্যে ১৯১১ সালে মাত্র ৮ যান বালিকা নিয়ে তিনি ১৫ ই মার্চ কলকাতায় সাখাওয়াত মেমোরিয়াল স্কুল স্থাপন করেন।১৯৩০ সালে এই স্কুলটি হাইস্কুল হিসেবে স্বীকৃতি পায়।নারীসমাজের উন্নয়ন এর উদ্দেশ্যে ১৯১৬ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ‘আঞ্জুমান খাওয়াতিন ইসলাম’ নামক মহিলা সমিতি।১৯২৬ সালে কলকাতায় অনুষ্ঠিত বাংলার নারীশিক্ষা বিষয়ক সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন।
১৯০২ সালে ‘পিপাসা’ নামক গল্প লিখে সাহিত্যজগতে পদার্পন করেন।’সওগাত’, ‘মোহাম্মদী’, ‘নবনূর’, ‘ধূমকেতু’, ‘সাধনা’ প্রভৃতি পত্রিকায় নারীজাগরন ও উন্মেষকে তরান্বিত করতে নানান প্রবন্ধ রচনা করেন।
তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ গুলি হলো-
মতিচুর-১ম খন্ড১৯০৫
মোট সাতটি প্রবন্ধ আছে।
Sultana’s dream -১৯০৮
মতিচুর -২য় খন্ড১৯২২।
সুলতানার স্বপ্ন বাংলায় অনূদিত হয়ে এই প্রবন্ধ গ্রন্থে যুক্ত হয়।
পদ্মরাগ-১৯২৬।দাদা ইব্রাহিম সাবের আলীকে উৎসর্গ করেন।
অবরোধবাসিনী-৪৮ টি কাহিনী সম্বলিত গ্রন্থ। এই গ্রন্থে পর্দা প্রথার বিরুদ্ধে ও নারী জাতির বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে আলোকপাত করেছেন।সমাজে নারী পুরুষের সমান অধিকারের দাবি জোরদার করেছেন।এই গ্রন্থটি প্রকাশ এর পর বহু সমালোচনা হয়েছিল।
‘নারীর অধিকার’ নামক একটি প্রবন্ধ রচনা করেন। নারীসমাজের অধিকার পুনরুজ্জীবন ও সচেতনার জন্য নিবেদিতপ্রাণা এই বেগম রোকেয়া ১৯৩২ সালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।