উপন্যাস ও ছোটগল্পবাংলা সাহিত্য

কথাসাহিত্যিক তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়

তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায় (১৮৯৮ – ১৯৭১) বাংলা কথাসাহিত্যের প্রবাদপ্রতিম এক ব্যক্তিত্ব। পিতা-হরিদাস বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মাতা-প্রভাবতী দেবী। তিনি মূলত আঞ্চলিক জীবন ভাবনার সুনিপুন কারিগর। তিনি ৬০ টি উপন্যাস এবং ৩০০ র বেশি ছোট গল্পের রূপকার। ভুদেব চৌধুরী তারাশঙ্কর কে ‘বাংলা ছোট গল্পের মহাকবি’ বলেছেন।

এখানে তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায় -এর উপন্যাসের তালিকা  দেওয়া হল।

চৈতালি ঘূর্ণী (প্রথম উপন্যাস) রচনাকাল(১৯২৯ – ১৯৩০) প্রকাশকাল-১৯৩১ খ্রিঃ। পাষানপুরী-১৯৩৩ নীলকন্ঠ-১৯৩৩ রাইকমল-১৯৩৫ প্রেম ও প্রয়োজন-১৯৩৬ আগুন-১৯৩৭ ধাত্রীদেবতা-১৯৩৮ কালিন্দী-১৯৪০
গনদেবতা-১৯৪২ মন্বন্তর-১৯৪৪ কবি-১৯৪২ অভিযান-১৯৪৬ সন্দীপন পাঠশালা-১৯৪৫ ঝড় ও ঝরাপাতা- ? তামস তপস্যা-১৯৪৮ পদচিহ্ন-১৯৫০ উত্তরায়ণ-১৯৫০ হাসুলি বাঁকের উপকথা-১৯৪৭ নাগিনী কন্যার কাহিনী-১৯৫২ আরোগ্য নিকেতন-১৯৫৩ চাপাডাঙ্গার বউ-১৯৫৪ পঞ্চপুত্তলি-১৯৫৬ কালান্তর-১৯৫৬ কালবৈশাখী-১৯৬৩ একটি চড়ুই পাখি ও কালো মেয়ে-১৯৬৩ জঙ্গলগড়-১৯৬৪ মঞ্জরী অপেরা-১৯৬৪
সংকেত-১৯৬৪ ভুবনপুরের হাট-১৯৬৪ বসন্ত রাগ-১৯৬৪ স্বর্গমর্ত্য-১৯৬৪ গন্নাবেগম-১৯৬৫  অরন্যবহ্নি-১৯৬৬  হিরাপান্না-১৯৬৬ মহানগরী-১৯৬৬ গুরুদক্ষিণা-১৯৬৬ যাঙ্গবল্ক -? মনিবৌদি-১৯৬৮ ছায়াপথ-১৯৬৯
কালরাত্রি-১৯৭০ অভিনেত্রী-১৯৭১ ফরিয়াদ-১৯৭১ শতাব্দীর মৃত্যু-১৯৭১ ব্যার্থ নায়িকা-১৯৭২ সখী ঠাকুরণ-১৯৭২  ভুতপুরান-(ছোটদের উপন্যাস) জনপদ-১৯৭২ নবদিগন্ত-১৯৭২ কীর্তিহাটের কড়চা-১৯৭২

উপন্যাসের পর্যায় ও কিছু তথ্য 

তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায় -এর উপন্যাস গুলি তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত: আদি পর্ব-১৯৩০-১৯৩৮ মধ্য পর্ব-১৯৩৯-১৯৪৭ এবং অন্ত পর্ব-১৯৪৮-১৯৭১

এক পয়সার শিশির পত্রিকায় প্রকাশিত ‘দীপার প্রেম’উপন্যাস টি তারাশঙ্কর এর প্রথম উপন্যাস।এটি গ্রন্থাগারে প্রকাশিত হয়নি। প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস চৈতালি ঘূর্ণী।সাবিত্রী প্রসন্ন চট্টোপাধ্যায় সম্পাদিত পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।মাটি ও মানুষের প্রতি মমতা এই উপন্যাসের উপজীব্য। নীলকন্ঠ উপন্যাসটির প্রথমে নাম ছিল ‘যোগ বিয়োগ’। পরে পরিমার্জন করে নীলকন্ঠ নাম প্রকাশিত হয়।এই গ্রন্থটি শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়কে উৎসর্গ করেন। ‘পাষান পুরী’ সরোজকুমার রায়চৌধুরী সম্পাদিত ‘নবশক্তি’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। এটিকে করা উপন্যাস বলা যায়। ‘রাইকমল’উপন্যাস টি গ্রন্থাগারে প্রকাশের সময় নাম হয়েছিল ‘প্রেম ও প্রয়োজন’। ‘ধাত্রী দেবতা’ উপন্যাসের প্রথমে নাম ছিল ‘জমিদারের মেয়ে’।এটিকে তারাশঙ্করের আত্মজীবনী মূলক উপন্যাস বলা হয়। শহর কলকাতাকে কেন্দ্র করে প্রথম উপন্যাস হলো ‘মনন্ত্বর’। ভারতবর্ষ পত্রিকায় ধারাবাহিক ভাবে ‘পঞ্চগ্রাম’উপন্যাস প্রকাশিত হয়।মহাগ্রাম, শিবকালিপুর,বালিয়ারা,কুসুমপুর,কঙ্কনা এই পাঁচটি গ্রামের কাহিনী বর্ণিত হয়েছে এই উপন্যাসে। ‘কবি’ উপন্যাসটি তারাশঙ্করের সর্বাধিক বিখ্যাত উপন্যাস।এটি কবি মোহিতলাল মজুমদারকে উৎসর্গ করেছিলেন। মৃত্যু রহস্যতা কেন্দ্রিক উপন্যাস ‘আরোগ্য নিকেতন’।

পুরষ্কার

১৯৬৬ সালে ‘গনদেবতা’ উপন্যাসে র জন্য ‘জ্ঞানপীঠ’ পুরস্কার পান।

‘আরোগ্য নিকেতন’ উপন্যাসটির জন্য ১৯৫৬ তে ‘রবীন্দ্র স্মৃতি’ও ‘একাডেমী’ পুরস্কার লাভ করেন।

গল্প, গল্পগ্রন্থ ও গল্পসঙ্কলনের তালিকা 

জলসাঘর ১৯৩৬(প্রথম গল্পগ্রন্থ) ছলনাময়ী-১৯৩৬ রসকলি-১৯৩৭ তিনশুন্য -১৯৪১ প্রতিধ্বনি -১৯৪৩ জাদুকরী -১৯৪৪ স্থলপদ্ম -১৯৪৪ প্রসাদ মালা -১৯৪৫ হারানো সুর -১৯৪৫ ইমারত -১৯৪৭ রামধনু -১৯৪৭
মাটি -১৯৫০ শিলাসন -১৯৫২ বিষপাথর -১৯৫৭ মানুষের মন -১৯৬৯ দীপার প্রেম -১৯৬৬ তপোভঙ্গ-১৯৬৬ পঞ্চ কন্যা -১৯৬৭  শ্রেষ্ঠ গল্প -১৯৪৭ মিছিল -১৯৬৮ শিবানীর অদৃষ্ট -১৯৬৭ জায়া -১৯৬৮ এক পশলা বৃষ্টি -১৯৬৮

তার বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য গল্পগুলি হলো –

উল্কা, রসকলি, মালাচন্দন, রাইকমল,বড়বৌ,মেলা, বাউল,খড়গ, মাধুমাস্টার, ব্যাধি, পুরোহিত, নারী ও নাগিনী, ঘাসের ফুল, কুলিনের মেয়ে, তারিণী মাঝি, প্রতিধ্বনি, তাসের ঘর, মাছের কাঁটা, অগ্রদানী, রাজপুত্র, সন্তান, কালাপাহাড়, রাজশাপ, মা, না, শাপমোচন, চোরের মা, বেদেনি, রাধারানী, ডাইনি, দিল্লিকা লাড্ডু, বন্দিনী কমলা, চোর, মায়দানব, ২৪শে ডিসেম্বর, তমশা, কান্না, স্বাধীনতা, বেদের মেয়ে, বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা, জটায়ু, মানুষের মন, একসিডেন্ট, একটি প্রেমের গল্প, প্রত্যাখ্যান, শশী ঠাকুরণ, জাদুকরের মৃত্যু, শেষ অভিনয় প্রভৃতি।
উপন্যাস ও গল্প ছাড়াও তিনি দু একটা নাটক ও লিখেছিলেন।
কালিন্দী – ১৯৪২ দুইপুরুষ – ১৯৪২ বিংশ শতাব্দী – ১৯৪৪ যুগবিপ্লব – ১৯৫১ সংঘাত – ১৯৬২ আরোগ্য নিকেতন – ১৯৬৮

আলোচক –  সুমনা সাহু, অ্যাডমিন, টার্গেট এসএসসি বাংলা